Skip to main content

লিভইন Vs বিয়ে


মুশকিল হচ্ছে , তুমি আমার পক্ষে না হয় বিপক্ষে । প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই সমীকরণ । কিন্তু এটা কি বাস্তবসম্মত ! মনে হয় না । আলোচ্য বিষয়টির ক্ষেত্রেও এরকম অবস্থান নিতে হবে জেনে বলি লিভিং টুগেদার ( এর চালু কোনও বাংলা এখনো আমার জানা নেই – এটারও একটা তাৎপর্য আছে) একটা ওপেন এন্ড বিষয় । মুলতঃ গভীর দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ব থেকে নিরাপদ থাকার জন্য এই অবস্থানের সৃষ্টি , যাতে চট করে অল্প আয়াসে ‘সম্পর্ক’ থেকে বেড়িয়ে আসার রাস্তা খোলা থাকে । সমাজে ক্রমবর্ধমান এই ব্যবস্থা বলাই বাহুল্য জনপ্রিয় হচ্ছে ক্রমশ । উলটো দিকে বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটিও এক সঙ্গে থাকার নামকরণ –যাতে একটা সামাজিক শীলমহর থাকে । এখন প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে এই ‘লিভিং...’ এর বিকল্প ব্যবস্থা কেন ? এটির জন্য মুলতঃ বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটির বহুল অপব্যবহার দায়ী , তার সঙ্গে জুড়ে আছে ব্যক্তিগত সুবীধাবাদ । সম্পর্ক চূড়ান্ত অসুস্থ হয়ে পড়লে তা বহন করে চলা বুদ্ধিমত্তা নয় মেনে নিয়েও বলি এই অসুস্থতার কারণ যথেষ্ট হওয়া বাঞ্ছনীয় । বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কের এই ‘ঠুনকোপনা’ থেকে রক্ষা করে এন্টিডোট এর মত । এছাড়াও মুলতঃ যে পাশ্চাত্য উন্নত দেশগুলি থেকে ‘লিভ টুগেদার’ এর ধারনা আমরা পেয়েছি ,সএসব দেশেই গত ৩০ বছরের গবেষণা থেকে দেখা যাচ্ছে সম্পর্কের ‘অসুখ’ সারানোয় এই ব্যবস্থা তুলনায় কম কার্যকর । শুধু তাই নয় এখানে নিরাপত্তাহীনতা ও অবসাদগ্রস্ত হওয়ার ঘটনাও বেশী । ঘরোয়া হিংসা এমন কি অর্থনৈতিক তুল্যমূল্য বিচারেও ‘বিবাহ’ অনেক বেশী গ্রহণ যোগ্য ।এ ছাড়াও আছে বহু নজ্ঞর্থক দিক ,যা এখানে আলোচনা করলে লেখাটির দৈর্ঘ্য বাড়বে ।
সর্বোপরি ‘লিভ টুগেদার’ এর সমর্থনকারীরা একটা বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করতে প্রায়শই ভুলে যান সেটা হলও - সন্তান । একটি কম দাগহীন , অল্প আয়াসে ভেঙ্গে যেতে পারে এমন সম্পর্কের অভিভাবকদের পারস্পরিক টানা –পড়েনের দায় কিন্তু তাদেরও নিতে হয় । তাতে তার বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় , তুচ্ছ কারণে সম্পর্ক ভেঙে গেলে সেই সন্তানটি বঞ্চিত হয় বাবা কিংবা মা যেকোনো একজনের অমূল্য সান্নিধ্য থেকে । যার জন্য সে দায়ী নয় । ‘লিভ টুগেদার’ মুলত দুজন প্রাপ্তবয়স্কের ব্যক্তি-স্বার্থের বোঝাপড়া – সেখানে সন্তান গৌণই থেকে যায় ।
উন্নত পৃথিবীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভোগবাদী ভুবনগ্রামে এরকম তাৎক্ষনিক সুবিধার ‘দায়হীন’ ব্যবস্থা  আরও আছে ,যেমন ‘হায়ার এন্ড ফায়ার’ – এই ব্যবস্থায় যারা অভ্যস্ত তাঁরা এটির কাঠামোয় ‘লিভইন’ কে ফেলে দেখতে পারেন ।

নিজে এই ‘বিবাহ’ নামক প্রতিষ্ঠানে রয়েছি এবং বিশ্বাসের সংগে রয়েছি ,তাই মনে করি কোনও ‘ব্যবস্থা’র অপব্যবহারের জন্য সেই ব্যবস্থাকে দায়ী করা অন্যায্য এবং তাকে বাতিল করে ‘লিভ টুগেদার’ নামক নতুন ব্যবস্থাকে অন্ধের মতো অনুসরণ – সুবিধাবাদেরই নামান্তর । 

Comments

Popular posts from this blog

অধর্ম

[ আমরা কেউ ধর্মে বিশ্বাস করি, কেউ হয়তো ধর্মকে পরিত্যাগ করিনি, কিন্তু ধর্ম নিয়ে মাথাও ঘামাই না, কেউ কট্টর নাস্তিক আবার কেউ বা ধর্মনিরপেক্ষ - কিন্তু একটা জায়গায় আমাদের গভীর মিল আছে, আমরা সবাই বাকস্বাধীনতায় প্রবলভাবে বিশ্বাসী। আর সেই জন্যই রাজীব হায়দার, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাস, নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়রা যে কথাগুলো বলতে চেয়ে প্রাণ হারালেন, সে কথাগুলো যাতে হারিয়ে না যায় তার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব। ওঁদের সঙ্গে আমাদের মতাদর্শের মিল আছে কি নেই সেটা এই মুহূর্তে অবান্তর প্রশ্ন। কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সমর্থনে সারা বিশ্ব জুড়ে একাধিক ব্লগার কিবোর্ড নিয়ে বসেছেন, সেই লেখাগুলো সঙ্কলিত করে দেওয়া হল পাঠকদের জন্য - তালিকাটি দেখা যাবে এই ব্লগপোস্টের শেষে।]    কি বলি বলুন তো  !এমন কিছু নতুন তো বলতে পারছি না যা আগে শোনেননি বা পড়েননি । এই নির্দিষ্ট  বিষয় নিয়ে হাজার হাজার শব্দ উচ্চারিত হয়েছে , লেখা হয়েছে । কেউ কিছু একটা লিখবে ,তার মতে , তার বিশ্বাস থেকে কিংবা বলবে- অমনি ঘাড়ে পড়বে 'চাপাতি' ! বেশ নাম ডাক হয়েছে ইদানীং এই যন্ত্রটির । কুপিয়ে দিয়ে তবেই শান্তি স্

নামকে ওয়াস্তে ...

বন্ধুর বাবার নাম ‘মোনালিসা’ !! কি ! হেঁচকি উঠলো তো ? ...কিংবা পাড়ার দুই যমোজ বোনের নাম ‘ জেরক্স’  ! এই জেরক্সের ব্যাপারটা বুঝলেও  বাবার নাম মোনালিসা –এটা একটু দুর্বোধ্য ঠেকতে বাধ্য । ব্যাপার হচ্ছে –সিম্পল – বন্ধুর বাবার পার্মানেন্ট মুখভঙ্গিটা এমনই যে কিছু দাঁত সব সময়ে বেড়িয়ে থাকে ,হঠাৎ করে কেউ দেখলে বিভ্রান্ত হতে বাধ্য – উনি বুঝি হাসছেন ! কিন্তু ওনার এটাই গড়পরতা এক্সপ্রেসন ! – এই হাসি -হাসিনয় রহস্যময়তার জন্যই – মোনালিসা নামকরন । কে কবে এই যথার্ত নামকরন করেছিলো আজ আর মনে নেই ।  সব বাবাদেরই একটা করে গোপন নাম ছিলো যা একমাত্র বন্ধু মহলেই ব্যাবহার করা হতো । যেমন – ‘স্মার্ট বয়’ ‘উৎপল(দত্ত)’, ‘জেমস বন্ড’ , ‘অমরীশ পুরি’ , ‘দিলীপকুমার’, ‘নাকাবন্দি’ ...আরও কত । ছিলো বন্ধুদেরও নাম ,যেমন ‘আঁতলা (আঁতেল)’ ‘টাকলা’ ‘লেটুয়া(ল্যাটা)’ ‘কাতলা’ , ‘এল কে (লাথখোর)’... আরও কত কি ! সব কি আর মনে আছে ছাই । স্কুলে স্যারেদেরও বেশ কিছু নাম ছিলো বেশ জনপ্রিয় যথা ‘ব্রেকড্যান্স’(নেচে নেচে নানান অঙ্গভঙ্গী করে পড়াতেন বলে) বা ‘মুকেশ’(নাকি সুরে পড়াতেন বলে) **এখন হলে হয়তো ‘হিমেশ’ হতো !! না না! এসব নামকরন স্রেফ ফাজ

গ্রীষ্মযাপন

                                            মাথার ওপর সিলিংফ্যানটাকে কেউ যেন টেনে ধরেছে , ঘুরছেই না যেন ! কেমন মিন মিন করে পাক খাচ্ছে ! কিছুক্ষন পর ঠিক যা আন্দাজ করেছিলাম তাই – ‘ক্যাঁও ক্যাঁও ’ করে বিচিত্র আওয়াজ করে এবার একদম স্থির হয়ে গেলো পাখা ! সব্বোনাশ ! এদিকে গরমে বস্ত্র উন্মোচন কত্তে কত্তে অন্তিম বস্ত্রখন্ডটিতে এসে পড়েছি । এরপর আর যাওয়া যাবে না ,গেলে তা সভ্যতার পরিপন্থী হবে ব্যাপারটা । অগত্যা আমাদের গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ( সধারনতঃ পুং) পোষাক বারমুডা নামক বিচিত্রদর্শন কটিবস্ত্রটি পরেই ছোটাছুটি – দৌড়া দৌড়ি লাঠি দিয়ে ,ঝুল ঝাড়া দিয়ে পাখাটার ওপর ঝাঁপিয়ে পরলাম – কৃত্রিম উপায় ঘুরিয়ে দিয়ে অনেক সময় চলতে শুরু করে সেই আশায় । অনেকটা ঠেলে গাড়ি স্টার্ট করার মতো । কিন্তু নাঃ ,নট নড়ন চড়ন । এরকম অভিজ্ঞতা আপনাদের হয়েছে কিনা জানিনা ,তবে না হয়ে থাকলে আপনার ভাগ্য প্রসন্ন । এই যেমন সুন্দর করে গন্ধ-সাবান দিয়ে স্নান সেরে গরমে পরার উপযুক্ত হাল্কা রঙএর পোষাক গায়ে চাপিয়েছেন কি চাপাননি – দুর্যোগের মত পাওয়ার কাট ! ব্যাস , কুল কুল করে বিভিন্ন শারীরিক সোঁতা বেয়ে ঘামের ধারা নেমে আসতে শুরু করলো , এমন নয় যে