প্রশ্নটা একরকম ঘেঁটেই গ্যাছে । কে –কি- কেন ইত্যাদি
নানা আরো অনুসারী প্রশ্নে । পাব্লিক রেডি আরও পাঁচবছরের জন্য জুতোপেটা মাথায় নিতে
। সে নতুন জুতোও হতে পারে –এই আশায় । দিকে দিকে রই রই কান্ড। দেহজীবিদের মতো
প্রসাধনে উগ্রতার তার বেঁধে ভোটজীবি প্রানীকূল নড়াচড়া শুরু করেছে । চিরকালীন
ভোটজীবিদের বাজারে এবার ভাগ মেরেছে লেখাজীবি,গানজীবি,অভিনয়জীবি...সমাজকর্মজীবি –
সমষ্টিগতভাবে এদের ‘সুশীল’’ ‘বুদ্ধিজীবি’ ইত্যাদি নামেও পরচিতি আছে । এদিকে
কাছাখোলা ফেসবুক-আনন্দবাজার ভোগী মধ্যবিত্ত ও মধ্যচিত্ত শ্রেনীর আবার সে কি গর্জন
! যেন এখুনি ঘুসি মেরে নাক ভেঙে দেবে ! “কেন এরা ? বেশ ছিলো তাঁত বুনছিলো ! ব্যাটা
রাজনীতির কি বোঝে ? সুযোগ বুঝে সেয়ানা খেলছে ।” যেন নিজেরা বিরাট রাজনীতি বোঝে !
সুযোগ পেলে তুমুল পালটে দেবে দেশের হাল-হকিকৎ !
দল বদলুদের নিয়ে আবার একচোট ছিনালপনা দেখে সেকি ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ
! যেন বাপ –ঠাকুরদার কাউকে কোনওদিন দ্যাখেনি দল বদলাতে ! আরে বাবা এ তো যুগে যুগে
দেশে দেশে হয়েই এসেছে । একি শালা সলমনের
ডায়ালগ “ একবার যো কমিটমেন্ট করাদিয়া...” বালাইষাট ! পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট কি
একতরফা থাকবে নাকি চিরকাল ! তার ওপর নিজে চাঁদু গামবুট পড়েও কাদায় নামবোনা ,
সন্ধ্যেবেলা বউকে বগলদাবা করে বসে সিরিয়ালের ফাঁকে ফাঁকে প্রতিপক্ষ দেখে ‘ডার্টি
পলিটিক্স’ বলে মধ্যবিত্ত কম্বল চাপাদিয়ে সুবিধাবাদের অম্বল নিয়ে শুয়ে পরে পরদিন
‘বাওয়েল ক্লিয়ার’ হয়নি বলে রোজকার মতো অফিস লেট করবো , অফিসে গিয়ে মোটা ক্যাপিটেসন
ফি দিয়ে কমযোগ্য সন্তানকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়র করে কিভাবে দেশের ঘাড়ে ঝোলানো যায়
তার প্ল্যান ছোকবো – আবার এদিকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলা চিরে নিজেকে ‘আম আদমী
পার্টি’ র গ্যাস খেয়ে আয়ানায় নিজেকে ‘কেজরীওয়াল’ দেখবো – এ তো বিস্তর বিপদ ! আয়না
আর কবে সত্যি কথা বল্লো !
বরং অপেক্ষা করি ‘নমো’ কিংবা ‘রাগা’ কিংবা ‘অকে’ নামে
কোনো পয়গম্বর যদি নেমে আসে তামাম দেশবাসীকে উদ্ধার করতে ! নিজেরা একটা ঘাসও
ছিঁড়বোনা । ঘুঁষ খাবো , বেলাইন করবো , ট্রাফিকরুল মানবোনা , যত্র তত্র মল-মুত্র
ত্যাগ করবো ,মোটা অর্থের বিনিময় সন্তানকে দামী স্কুলে ভর্তি করবো-নিজেকে এবং
অন্যকে বোঝাবো এটা ঘুঁষ নয় অনুদান এবং আশা করবো সে একজন সৎ নাগরিক হয়ে উঠবে , লোন নিয়ে শুধবোনা –জানিতো সরকার বদলালেই ‘ঋণ
মকুব’ ।
বাংলা বক্তৃতার ভাষায় ‘চাষিভাই’ ‘চাষিভাই’ বড্ড শোনা যায়
,কই ‘শ্রমিকভাই’ , ‘কেরানীভাই’ , ‘ব্যাবসাদারভাই’ ততোটা শোনা যায়নাতো ! আরে সিংহ
ভাগ ভোটার তো কৃষিজীবি ! বাদবাকি সরকারি চাকুরে ,সেতো সময় মতো একটু ধানাই পানাই
করে ইনক্রিমেন্ট – বোনাস দিয়ে দিলেই ঠাণ্ডা । বড় জোর বেছে বেছে ইয়ার এন্ডিং এর সময়
ব্যাঙ্ক ধর্মঘট ,কিংবা ক্যালেন্ডার ইয়ারে বন্ধ । পরদিন খবরের কাগজে হেডিং “ জনজীবন
স্তব্ধ করে বন্ধ সফল” আহা ! কি আস্ফলন ! জনজীবন স্তব্ধ করা কি ধরনের সাফল্য – এর
মৌতাত নিতে নিতে । এসব দেখবো ,উপভোগ করবো সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠি –দল –দপ্তর –পেশার
মুন্ডুপাত করবো পরিচিত ও নিরাপদ বৃত্তে ! কি অদ্ভুত ভন্ডামি ,চূড়ান্ত দ্বীচারিতা !
এসব নাহয় হলো , এদিকে দলগুলোও তেমনি ! দলদপ্তরের সামনে
তুমুল বিক্ষোভ –কারন ‘টিকিট’ পাইনি তাই ! ‘জনসেবা’ করার সুযোগ না পেয়ে বেজায়
বিক্ষুব্দ! ভাবা যায় ! আর একদল বুড়ো দামড়া কিছুতেই নবীনদের জায়গা ছাড়বেনা ! এদিকে
ক্ষমতাসীন ‘নবীন’ গোষ্ঠি যাদের গড় বয়স ৬০, টুক করে পাত্তা সাফ করে দিয়েছে জেনে সে
তাদের আবার কি কাঁদুনি ! এইসব নিয়েই আমাদের গনতন্ত্রের মহানতম উৎসব এসে গ্যাছে দোর গোড়ায় । এবার যদি
একটু ব্যালকনী থেকে উঁকি না মেরে নিচে নেমে দেখিই না ! নিজের নিরাপদ –আরামাপ্রদ
বৃত্তের বাইরে এসে । কারন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা যে বিক্রিযোগ্য , ‘আম আদমী’র
ধ্বজাধারী আর একটি নতুন ব্রান্ড, নতুন মার্কেটিং স্ট্রাটেজি , ‘আন্না’ও যে রামদেব
বাবার মতোই পলায়ন পটু – এতো দেখা গেলোই ! তাই জনতা একটু সাবালোক হোন এবার ...পাঁচ
বছরে একবার আঙুলে টিপ পড়ে গনতান্ত্রিক দায়ীত্ব পালন করে , রাম-শ্যাম কাউকে সামনে
তুলে আনবো যাতে যাবতীয় দুর্নীতি, অপশাসন, ধর্ষণ , রাজনৈতিক দৈন্যতার দায় তার/তাদের
ঘাড়ে নিশ্চিন্তে চাপিয়ে নির্বোধ শ্লাঘা লেহন করতে পারি – এ ফর্মুলা তো অনেক হলো !
Comments
Post a Comment