Skip to main content

জন্মদিন ৪০

......বেশ আবার একটা জম্মদিন চলে এলো । যতই কেতা করিনা কেন এই দিনটা এলে বেশ একটা ইয়ে ইয়ে লাগে । মনে হয় কি অদ্ভুত ! একটা গোটা দিনে আজ আমিই গুরুত্বপূর্ন একটা ব্যাপার ! ছোটবেলার কথা বাদ দিন , তখন মুখিয়ে থাকতাম কবে আবার জন্মদিন আসবে , এলেই ফুর্তি ,মূল ব্যাপার নানা উপহার পাওয়ার একটা চান্স তৈরী হবে - বইটা (তখন বই দেওয়ার রেওয়াজ ছিলো ভাগ্যিস !) ,পেনটা , এটা সেটা । বাবা -মা একটা নতুন জামা দিতেন ।পয়লা বৈশাখ আর পুজো ছাড়া এটা ছিলো বছরের তৃতীয় প্রাপ্তি  তা আনন্দ হবে না ! তার ওপর ছিলো পাড়ার কোয়ার্টারের আরো সম-অসম বয়সিদের সঙ্গে বেশ একটা খাওয়া দাওয়া । নাঃ খুব একটা বাহুল্য থাকতোনা সেসব জন্মদিনে যা করার মা-ই করতেন । বেশ উত্তেজনা হতো আরও একবছর বড় হয়ে গেলাম বলে ,তখনতো আর জানতাম না 'বড়' হওয়ার ঝকমারি কি কি এবং কোন কোন দিক থেকে কাহিল করে তুলতে পারে !এখন জন্মদিন  এলে  উত্তেজনা হয়না , একটু কনফিউস হয়ে যাই আহ্লাদিত হবো !ভেবেনাকি হবোনা এই ভেবে! কারন এখনতো আর বড় হচ্ছিনা - বুড়োহচ্ছি ! কিন্তু সকালে ফেসবুক খুলে মনটা বেশ ভালো হয়ে গেলো-এই  কত্ত লোকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে দেখে ! কত লোকে ...তারা কেউ আমায় খুব চেনে , কেউ কম চেনে ,কেউকেউ আবার চেনেই না ! শুভেচ্ছা , ই-কার্ডে টাইমলাইন ভরে উঠছে , মাথায় ঘুরছে আমার বড়দা (জ্যাঠতুতো) করা অনবদ্য উইশ "                
WISH YOU HAPPY BIRTHDAY...SO DON'T WORRY, IN 21ST CENTURY, LIFE STARTS AT 40...HOPEFULLY WILL SEE YOU WITH BIFOCAL GLASS SHORTLY...I GOT IT JUST AFTER CROSSING 40" !!!! 
তাহলে 'ওরি' করার কথা লুকিয়ে আছে কোথাও ! কিজানি ! নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম এই হাত-পা-মাথা-পেট-বুকের বয়স ৪০ হয়ে গেলো !! তাজ্জব ! নাঃ চশমা ওঠেনি চোখে এখনো , কিন্তু চশমার চিন্তা এবারে এসে গেলো । একযুগ হতে চল্লো বে-থা হয়েছে , বড় মেয়েটা আজ আচমকাই দেখলাম প্রায় কাঁধে পড়ছে ! বউ দেখি আজকাল বড্ড শাসন-টাসন করার চেষ্টা করছে , ৪০ থেকে ৫০-৫৫ নাকি খুব খারাপ বয়স ! যাব্বাবা ! 'খারাপবয়স"তো সেই কবে রেখে এসছি পিছনে ! একটা জীবনে কটা খারাপ বয়স আসতে পারে !আবার সেই " খারাপবয়স" এর নেশাতুর সময়ের কথা ভেবে বেশ সোজা হয়ে বস্লাম । মনে মনে মুচকি হাস্লাম । কিন্তু এ কেসটা আলাদা জানলামইতিমধ্যেই কিছু বন্ধুবান্ধব বিভিন্ন প্যারামিটার বিগরে রিটায়ার হার্ট ! কেউ হন হন করে সকালে হাঁটছে শরীরের চিনি নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য , একটু বড় একজনতো বুকে গতিযন্ত্রই বসিয়ে ফেল্লো ! আজকাল আর রোগ আর ভোগ -কোনোটারই এজ লিমিট নেই । কিন্তু দেখছেন আমি ছাই জন্মদিনে বসে এসব ভাবছি কেন ! কোন এক রহস্যজনক কারনে প্যরামিটারগুলি এখনো ঠিক আছে ( কে জানে ! মাপিনি ,মাপলেই বিপত্তি হয় যদি! তখন আবার এটা বারন সেটা বারন ) গান্ডেপিন্ডে গিলছি চারবেলা । নানা জৈবিক কাজকর্মগুলি কামাইহীনভাবে করে চলেছি নিয়মিত , কোনো গন্ডগোল নেই!  
 এসব নিয়ে ভাবছি কেন ? কেনইবা ভাববো ! আমার জন্মদিন , আপনারা সবাই আমায় শুভেচ্ছে জানিয়েছেন আরো ভালো থাকার ,বছরের পর বছর যেন এভাবেই জীবনের নির্যাস নিয়ে যেতে পারি তার কামনা করেছেন ,আরা আমার কি চাওয়ার থাকতে পারে ! এত্ত এত্ত কথা তো ২০ বছরের জন্মদিনে ভেবেছিলাম বলে মনে পড়েনা ! কি জানি তখন হয়তো অন্য চিন্তা ভাবনা মাথার মিক্সিতে চিন্তার ঘোল তৈরী করছিলো ! যে বয়সের যা বুঝলেন তো । ৪০...৪৫...৪৮... মেয়েটা আমার কাঁধ ছাড়িয়ে যাবে ...আমি দেখবো , ছেলেটা আমার চটি পড়ে পাড়ায় আড্ডা দিতে বেরিয়ে যাবে ... আমি বোধহয় দিনে দিনে রক্ষনশীল হয়ে উঠবো ...ছোট মেয়ে কোচিংক্লাস থেকে ফিরতে দেরী করলে রাস্তার
মোড়ে পায়চারি করবো ...কি জানি আর কি কি করবো !  
        
...শুধু 'বাইফোকাল' এলে তাকে ওয়েলকাম করে লক্ষ্য রাখবো তার নিচে পৃথিবীব্যাপি নতুন নতুন 
রঙের শেডগুলো যেন নেশার মতো পেয়ে বসে আমায়...।

Comments

Popular posts from this blog

অধর্ম

[ আমরা কেউ ধর্মে বিশ্বাস করি, কেউ হয়তো ধর্মকে পরিত্যাগ করিনি, কিন্তু ধর্ম নিয়ে মাথাও ঘামাই না, কেউ কট্টর নাস্তিক আবার কেউ বা ধর্মনিরপেক্ষ - কিন্তু একটা জায়গায় আমাদের গভীর মিল আছে, আমরা সবাই বাকস্বাধীনতায় প্রবলভাবে বিশ্বাসী। আর সেই জন্যই রাজীব হায়দার, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান, অনন্ত বিজয় দাস, নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়রা যে কথাগুলো বলতে চেয়ে প্রাণ হারালেন, সে কথাগুলো যাতে হারিয়ে না যায় তার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব। ওঁদের সঙ্গে আমাদের মতাদর্শের মিল আছে কি নেই সেটা এই মুহূর্তে অবান্তর প্রশ্ন। কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সমর্থনে সারা বিশ্ব জুড়ে একাধিক ব্লগার কিবোর্ড নিয়ে বসেছেন, সেই লেখাগুলো সঙ্কলিত করে দেওয়া হল পাঠকদের জন্য - তালিকাটি দেখা যাবে এই ব্লগপোস্টের শেষে।]    কি বলি বলুন তো  !এমন কিছু নতুন তো বলতে পারছি না যা আগে শোনেননি বা পড়েননি । এই নির্দিষ্ট  বিষয় নিয়ে হাজার হাজার শব্দ উচ্চারিত হয়েছে , লেখা হয়েছে । কেউ কিছু একটা লিখবে ,তার মতে , তার বিশ্বাস থেকে কিংবা বলবে- অমনি ঘাড়ে পড়বে 'চাপাতি' ! বেশ নাম ডাক হয়েছে ইদানীং এই যন্ত্রটির । কুপিয়ে দিয়ে তবেই শান্তি স্

নামকে ওয়াস্তে ...

বন্ধুর বাবার নাম ‘মোনালিসা’ !! কি ! হেঁচকি উঠলো তো ? ...কিংবা পাড়ার দুই যমোজ বোনের নাম ‘ জেরক্স’  ! এই জেরক্সের ব্যাপারটা বুঝলেও  বাবার নাম মোনালিসা –এটা একটু দুর্বোধ্য ঠেকতে বাধ্য । ব্যাপার হচ্ছে –সিম্পল – বন্ধুর বাবার পার্মানেন্ট মুখভঙ্গিটা এমনই যে কিছু দাঁত সব সময়ে বেড়িয়ে থাকে ,হঠাৎ করে কেউ দেখলে বিভ্রান্ত হতে বাধ্য – উনি বুঝি হাসছেন ! কিন্তু ওনার এটাই গড়পরতা এক্সপ্রেসন ! – এই হাসি -হাসিনয় রহস্যময়তার জন্যই – মোনালিসা নামকরন । কে কবে এই যথার্ত নামকরন করেছিলো আজ আর মনে নেই ।  সব বাবাদেরই একটা করে গোপন নাম ছিলো যা একমাত্র বন্ধু মহলেই ব্যাবহার করা হতো । যেমন – ‘স্মার্ট বয়’ ‘উৎপল(দত্ত)’, ‘জেমস বন্ড’ , ‘অমরীশ পুরি’ , ‘দিলীপকুমার’, ‘নাকাবন্দি’ ...আরও কত । ছিলো বন্ধুদেরও নাম ,যেমন ‘আঁতলা (আঁতেল)’ ‘টাকলা’ ‘লেটুয়া(ল্যাটা)’ ‘কাতলা’ , ‘এল কে (লাথখোর)’... আরও কত কি ! সব কি আর মনে আছে ছাই । স্কুলে স্যারেদেরও বেশ কিছু নাম ছিলো বেশ জনপ্রিয় যথা ‘ব্রেকড্যান্স’(নেচে নেচে নানান অঙ্গভঙ্গী করে পড়াতেন বলে) বা ‘মুকেশ’(নাকি সুরে পড়াতেন বলে) **এখন হলে হয়তো ‘হিমেশ’ হতো !! না না! এসব নামকরন স্রেফ ফাজ

গ্রীষ্মযাপন

                                            মাথার ওপর সিলিংফ্যানটাকে কেউ যেন টেনে ধরেছে , ঘুরছেই না যেন ! কেমন মিন মিন করে পাক খাচ্ছে ! কিছুক্ষন পর ঠিক যা আন্দাজ করেছিলাম তাই – ‘ক্যাঁও ক্যাঁও ’ করে বিচিত্র আওয়াজ করে এবার একদম স্থির হয়ে গেলো পাখা ! সব্বোনাশ ! এদিকে গরমে বস্ত্র উন্মোচন কত্তে কত্তে অন্তিম বস্ত্রখন্ডটিতে এসে পড়েছি । এরপর আর যাওয়া যাবে না ,গেলে তা সভ্যতার পরিপন্থী হবে ব্যাপারটা । অগত্যা আমাদের গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ( সধারনতঃ পুং) পোষাক বারমুডা নামক বিচিত্রদর্শন কটিবস্ত্রটি পরেই ছোটাছুটি – দৌড়া দৌড়ি লাঠি দিয়ে ,ঝুল ঝাড়া দিয়ে পাখাটার ওপর ঝাঁপিয়ে পরলাম – কৃত্রিম উপায় ঘুরিয়ে দিয়ে অনেক সময় চলতে শুরু করে সেই আশায় । অনেকটা ঠেলে গাড়ি স্টার্ট করার মতো । কিন্তু নাঃ ,নট নড়ন চড়ন । এরকম অভিজ্ঞতা আপনাদের হয়েছে কিনা জানিনা ,তবে না হয়ে থাকলে আপনার ভাগ্য প্রসন্ন । এই যেমন সুন্দর করে গন্ধ-সাবান দিয়ে স্নান সেরে গরমে পরার উপযুক্ত হাল্কা রঙএর পোষাক গায়ে চাপিয়েছেন কি চাপাননি – দুর্যোগের মত পাওয়ার কাট ! ব্যাস , কুল কুল করে বিভিন্ন শারীরিক সোঁতা বেয়ে ঘামের ধারা নেমে আসতে শুরু করলো , এমন নয় যে